আমাদের সপ্ন গুলো কতটা বড়?

আমরা কি জানি আমাদের সপ্ন কি? জাতীয় উত্তর হিসেবে পাওয়া যাবে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়া। সত্যি কি তাই!
ধরে নিলাম উত্তরটা ঠিক। তবে আমি যদি একটা ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভারসিটি বা মেডিকেল থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারি হিসেবে পড়ালেখা শেষ করলাম, তবে আমার অবস্থানটা কোথায়! তাহলে কি আমার জীবন শেষ, নাকি
আমি এই অবস্থার পর সপ্নহীন কোন অগন্তুকে পরিণত হলাম! এই সপ্নহীন অগন্তুকেরা সমাজের কোন উপকারে আসে বলে আমার মনে হয় না। কারণ এদের দিনগুলো ঘড়ির ঘন্টার কাটার সাথে ছুটতে থাকে। যেখানে না থাকে বিনোদন না থাকে উল্লাস। এরা নিজেদেরকে নিয়ে এতোটাই ব্যাস্ত যে জীবনের সুন্দর দিকগুলো দেখার মত সময় তাদের কাছে অনেক দুরুহ। তাই এরকম জীবন কারই বা কাম্য হতে পারে!

এই চিন্তার সুত্রপাত সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। টিভির একটি বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম যার পর থেকেই এই সপ্ন শব্দটার প্রতি প্রবল এক আকর্ষণ কাজ করতে শুরু করেছিল। বিজ্ঞাপনটিতে একজন সাংবাদিক প্রত্যন্ত এলাকার এক শিশুকে জিজ্ঞাসা করেছিল " বড় হয়ে কি হতে চাও? " শিশুটির উত্তর ছিল " আমার বাবা চাষা। তাই আমিও চাষাই হব। এর বেশি কিছুতো আর সম্ভব না"

এই উত্তর আমার মনে একটা আঘাত করেছিল। ভাবছিলাম এখনো এরকম অনেকে আছে যাদের সপ্ন দেখার সুযোগটুকুও নেই। আর এসি রুমে বসে থাকা অনেকের কাছে শুনা যাবে " আমি জানি না আমার সপ্ন কি! " এটাই বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতাই আমাদের ঘিরে আছে।

সপ্ন সেটা না যা তুমি ঘুমিয়ে দেখ, সপ্ন সেটা যা তোমাকে ঘুমাতে দেয় না।

সপ্নের গুরুত্ব অনেক বেশি, কেননা জীবনের প্রত্যেক কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সময় নিজের সপ্নটা বিশাল একটা প্রভাব বিস্তার করে। আর সপ্নের প্রতি সঠিক আকর্ষণ না থাকলে জীবনকে অর্থহীন মনে হয়।

তাই প্রত্যেকের সপ্ন দেখা উচিত তবে সেটা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সপ্ন হতে হবে এটা নিয়ে আমি ভিন্নমত পোষণ করি। আমার মতে সপ্ন দেখাটাও একটা অনেক বড় পাওয়া। তাই একে একটা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়া এরকম ছোট্ট পরিসরে বেধে রাখা উচিত না। বরং আমাদের উচিত এমন মানবকল্যানে এমন কিছু করা যা আরো দশটা মানুষের মনে সপ্নের জন্ম দিবে।

পরিশেষে একটা কথা বলবো- আসুন না বড় মানুষ হবার সপ্ন দেখার আগে একটা ভালো মানুষ হবার সপ্ন দেখি। জীবনটা অনেক ছোট তাই নিজে হাসি, অন্যের হাসির কারণ হই।

Comments